খুলনা জেলা প্রতিনিধি ..
খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী থানা পুলিশ আজ শনিবার ভোর রাতে ফুলবাড়ীগেট এলাকা থেকে ৩ অপহরন কারীকে গ্রেফতার করেছে।এ সময় তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক হেফাজতে থাকা অপহৃত গিলাতলা দক্ষিন পাড়ার ভিকটিম মোঃ জিহাদ শেখ ও মোঃ আলামিন হোসেনকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায় গত ১২ আগষ্ট শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে গিলাতলা দক্ষিনপাড়ার সামাদ শেখ এর পুত্র ভ্যানচালক জিহাদ শেখ ভ্যান নিয়ে ভাড়া টানার জন্য বাসা থেকে বের হয়।রাত সোয়া ৮ টার সময় জিহাদ এর ছোট ভাই জিয়ারুল এর মোবাইলে ফোন দিয়ে জিহাদ বলে আমাকে আটকিয়ে রেখেছে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আয়, এর পরই ফোন বন্ধ পাওয়া যায়, কিছুক্ষন পর আবার ফোন করে অপহরনকারীরা জিহাদ এর ছোট ভাই জিয়ারুল কে একটা বিকাশ নং দেয় এবং উক্ত নাম্বারে টাকা পাঠাতে বলে।জিহাদের পিতা বিষয়টি খানজাহান আলী থানার ওসিকে অবহিত করলে থানা পুলিশ তৎক্ষনিকভাবে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপহরনকারীদের অবস্থান তেলিগাতি এলাকায় সনাক্ত করে নিশ্চত হন।
এক পর্যায়ে জিয়ারুল অপহরনকারীদের ফোনে বলে এত রাতে বিকাশ এর দোকান খোলা নেই সরাসরি ছাড়া টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। তখন অপহরনকারীরা ফোনে তাকে কুয়েট পকেট গেট এর সামনে যেতে বলে। তাদের কথা মতো জিহাদ এর পিতা আসলাম শুক্রবার দিনগত রাত ৪ টার সময় কুয়েট পকেট গেছে গেলে অপহরনকারী চক্রের সদস্য শক্তি ফাউন্ডেশনের সভাপতি উজ্জল (২৭), তেলিগাতী সরদার পাড়া এলাকার হান্নান শেখ এর পুত্র তরিকুল (২০) , একই এলাকার আবু বক্কার এর পুত্র মোঃ মুন্না হোসেন (২৬) সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে সেখানে পুর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা পুলিশ দেখে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে খানজাহান আলী থানার এস আই হাসানুজ্জান, এস আই দেবেশ, এ এস আই তুহিন , এ এসআই শরিফুলসহ আড়ংঘাটা থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাদেরকে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকৃতরা স্বীকার করে তারা ২ জনকে আটকে রেখেছে এবং তাদের মুক্তিপন বাবদ ৫০ হাজার টাকা নিতে এসেছে কুয়েট পকেট গেটে। অপহরনকারীদের দেওয়া তথ্যমতে তেলিগাতী মধ্যপাড়া ক্লাব মোড়স্থ মৃত শেখ শাহাজান এর ভাড়াটিয়া মোঃ জামিরুল ইসলাম এর ভাড়া বাসা হতে অপহরনকারীদের হেফাজতে থাকা মোঃ জিহাদ শেখ ও মোঃ আলামিন হোসেনকে উদ্ধার করে পুলিশ।
অপহরনের স্বীকার হওয়া ভ্যান চালক মোঃ জিহাদ শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে জানায় শুক্রবার রাত সোয়া ৮ টায় ভ্যানগাড়িতে একটা টিপ দেওয়া লাগবে এবং তাদের ভ্যান ভাড়া বাড়িয়ে দিবে বলে তাদের তেলিগাতী মধ্যপাড়া ক্লাবমোড়ে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন মহিলাদের সাথে অশ্নিল ভিডিও ও ছবি তুলে ভাইরাল করে দিবে বলে হুমকি দেই।
এলাকাবাসি জানান আটককৃতরা একটি বড় ধরনের সিন্ডিকেট চক্র, দির্ঘদিন ধরে ফ্লাট বাসায় মহিলাদের সাথে অশ্নিল ভিডিও করে নিরিহ ভ্যান চালক সহ সাধারন মানুষকে জিম্মি করে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে।অনেকে মানসম্মানের ভয়ে তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে বাধ্য হয়েছে । আটককৃত মোঃ মুন্না হোসেন এর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রয়েছে।
খানজাহান আলী থানার ওসি মোঃ কামাল হোসেন খান জানান, ঘটনা জানার পর থেকে উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনায় থানার একটি বিশেষ টিম রাতভর অভিযান চালিয়ে আসামি ও ভিকটিম উদ্ধারে সক্ষম হয় ।