স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট…..
বিএনপির এক দফা আন্দোলন মোকাবিলায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত বড় বড় গণজমায়েত দিয়ে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেপ্টেম্বর মাস থেকেই এসব কর্মসূচি শুরু করে মাঠে থাকবে দলটি।
পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও কঠোর হবে সরকার।
এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে সভা-সমাবেশ, নির্বাচনী প্রচার সমাবেশ, সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশ, যেগুলোকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গণজমায়েত ডাকা হবে।
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি দলের সহযোগী সংগঠনগুলোও এ ধরনের গণজমায়েত কর্মসূচির আয়োজন করবে। এসব কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সারা দেশে জেলা পর্যায়ে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।
অক্টোবর থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনী প্রচারের বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সেসব সমাবেশে বিপুল জনসমাগম করবে আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগসহ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক দফার আন্দোলন শুরু করেছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। সেপ্টেম্বর থেকে এই আন্দোলন আরও জোরদার করার কথা বলা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, বিএনপি আন্দোলনে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে না। ইতোমধ্যেই তারা আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে। এর কারণ হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন, বিএনপি যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে, তাতে জনগণের সমর্থন নেই। আর তা না থাকায় বিএনপি এখন সন্ত্রাস, সহিংসতার পথ বেছে নেবে বলে আওয়ামী লীগের আশঙ্কা।
তবে বিএনপির এই সরকার পতনের আন্দোলনসহ যেকোনো তৎপরতা প্রতিহত করতে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুইভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার এবং আওয়ামী লীগ। আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যেকোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর ভূমিকা নেবে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও রাজপথে থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিগুলোতে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটানো হবে।
এরই অংশ হিসেবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বড় ধরনের ছাত্র সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে এবং পাঁচ লাখের বেশি ছাত্রছাত্রীর সমাবেশ ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছে।
পরদিন আগামী ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সুধী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর এ সুধী সমাবেশে ব্যাপক গণজমায়েতের প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনগুলো।
আগামী ২৮ অক্টোবর চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ টানেল উদ্বোধন করবেন। ওইদিন সেখানেও সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হবে। এই সুধী সমাবেশেও ব্যাপক গণজমায়েত করা হবে বলে জানা গেছে।
আগামী ২০ অক্টোবর রাজধানীর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ে মেট্রোরেলের উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন। মেট্রোরেলের এই অংশের উদ্বোধন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন।
মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে এই সুধী সমাবেশেকে কেন্দ্র করে ওইদিন রাজধানীতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে বিশাল শোডাউন করবে আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া যেকোনো দিন, যেকোনো সময় রাজপথে নামতে প্রস্তুত থাকবেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে দলকে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকরা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির আন্দোলন মানে আবার নতুন করে অস্ত্রের ঝনঝনানি, অস্ত্রবাজি, আগুন সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ। এগুলো তারা আবার আগের মতো নতুন করে করবে। কারণ জনসম্পৃক্ততা না থাকায় তাদের আন্দোলন ব্যর্থ। তবে এগুলো করলে পুলিশ আছে, পুলিশ কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেবে। আর আমরা আওয়ামী লীগও মাঠে থাকব। কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না, এটি আমাদের স্পষ্ট কথা।