কেসিসি নির্বাচন: কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ‘হরেক’ পেশার সমন্বয়

Khulna-2305290951.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক……..

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, আইনজীবী, ঠিকাদার, ইন্স্যুরেন্স কর্মকর্তা, চাকরিজীবী ও শ্রমিকের সমন্বয় ঘটেছে। সঙ্গে আছেন বেকার এবং কয়েকজন সমাজসেবকও। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এবারের নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৬৮ ভাগ প্রার্থীরই আয়ের উৎস ব্যবসা ও ঠিকাদারি।

হলফনামায় দেখা গেছে, কেসিসি নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত মোট ৪১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৫ প্রার্থী। তাদের মধ্যে ৮৬ জনই ব্যবসায়ী এবং ৩৩ জন ঠিকাদার। ব্যবসা ও ঠিকাদারির বাইরে ১৬ জন গৃহিনী নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। এর বাইরে ৬ জন আইনজীবী, ৫ জন চাকরিজীবী, ৫ জন শিক্ষক, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন শ্রমিক ও একজন দন্ত চিকিৎসক। এছাড়া কৃষি ও মৎস্য চাষকে পেশা দেখিয়েছেন ১০ জন।

পেশার ঘরে ‘প্রযোজ্য নয়’ উল্লেখ করেছেন ৫ জন।

হলফনামায় নিজেকে শ্রমিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নাসির ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন মাতব্বর। দন্ত চিকিৎসাকে পেশা দেখিয়েছেন ১০ নম্বর ওয়ার্ডের এ এম এম সায়েম মিয়া।

হলফনামা বিশ্লেষণ করে আরও দেখা গেছে, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মাওলা শানু পেশার ঘরে লিখেছেন ‘পরামর্শক’। সমাজসেবাকে পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন সংরক্ষিত ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাহমুদা বেগম। এছাড়া কার্তিককুল সালেহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুস সালাম এবং দৌলতপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী এবারও প্রার্থী হয়েছেন।

শিক্ষক আবদুস সালাম ও মোহাম্মল আলী যথাক্রমে খুলনার ৩ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী। এছাড়া নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে এজাজ শেখ নামের একজন প্রাইভেট শিক্ষক এবং সংরক্ষিত ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ঝুমুর শেখ নামের আরেক কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।

নিজেকে মৎস্য চাষি হিসেবে উল্লেখ করেছেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান হাফিজ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর টিপু। সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মাজেদা খাতুন আয়ের উৎসের ঘরে লিখেছেন ‘দর্জি’। একই তথ্য দিয়েছেন সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের আঞ্জুয়ারা বেগম।

অপরদিকে, এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে দু’জন সাংবাদিক অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে দৈনিক পূর্বাঞ্চলের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আনোয়ারুল ইসলাম কাজল এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দৈনিক সময়ের খবরের সিনিয়র ফটো সাংবাদিক রবিউল গাজী উজ্জল।

এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটি-সনাকের সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা বলেন, বিভিন্ন সময় আয়কর নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায় জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিকরাই নিজেদের ব্যবসায়ী, কৃষি ও মৎস চাষি হিসেবে পরিচয় দেন। ফলে নির্বাচিত হওয়ার পরে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আসে। এজন্য হলফনামায় আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবসা লিখলেও কী ধরনের ব্যবসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোথায় তা বিস্তারিত উল্লেখ করা উচিত। তাহলে ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে।

আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি করপোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ডের ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ২৮৯টি কেন্দ্র ও ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top