জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক..
আমির হোসেন আমু। জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৪০। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। সরকারের সাবেক শিল্পমন্ত্রী। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি নিয়ে জাগো নিউজের মুখোমুখি হন। নতুন কমিটি ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে আলোচনা করেন।
২২তম কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা দশমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হলেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি বিরল ঘটনাও বটে। আপনি দলের জ্যেষ্ঠ নেতা। নতুন কমিটিকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আমির হোসেন আমু: সামনের বছরই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতি ও জাতীয় নির্বাচন ঘিরে এই কাউন্সিল ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে একটি আন্দোলন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য পার্টির ভেতরে স্থিতিশীল অবস্থা দরকার।
এই স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখার জন্যই পুরোনো নেতৃত্ব থাকা গুরুত্ব বহন করে। দলের সভাপতির বিষয়টি তো প্রশ্নের বাইরে। এই পদ নিয়ে আপাতত আলোচনা করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। দলের প্রয়োজনে আমরা তাকে নির্বাচিত করেছিলাম। তিনি বারবার সভাপতির পদ ছেড়ে দিতে চেয়েছেন। আমরাই তাকে জোর করে রাখি। ভবিষ্যতেও তাকে আমরা এই পদের জন্য যোগ্য মনে করবো।
আমির হোসেন আমু: দেখুন, যারা কমিটিতে ছিলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিশেষ পরিচিতি এবং নেতৃত্ব গড়ে তুলেছেন। সভা-সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের মধ্যে গুরুত্ব তৈরি করেছেন। নির্বাচনের এক বছর আগে যদি কমিটিতে বড় পরিবর্তন করা হতো, তাহলে বিশৃঙ্খলা দেখার আশঙ্কা থাকতো। নির্বাচন এবং আন্দোলন সামনে রেখে পুরোনোদের দায়িত্বে রাখা হয়েছে।
আমির হোসেন আমু: দল আসলে কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছে না এই মুহূর্তে। নির্বাচনের সময় পার করার জন্য এই কমিটি বহাল থাকা জরুরি বলে মনে করেছে দল।
শেখ হাসিনা সভাপতির দায়িত্বে থাকতে চাইছেন না। আগেও এমন অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন। বয়সকেও সামনে আনছেন তিনি। বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করতে না পারা দলের ব্যর্থতা কি না?
আমির হোসেন আমু: শেখ হাসিনার কাছে আসলে বয়স কোনো ব্যাপার নয়। তিনি এই বয়সেও যে পরিশ্রম করতে পারেন, তার অর্ধেক বয়সী মানুষেরাও সে পরিশ্রম করতে পারেন না। এটি বাস্তবতা।
তিনি থাকতে চান না এটি বারবার বলছেন ঠিক, কিন্তু আমরা আপাতত তার কোনো বিকল্প দেখতে পাই না। আমাদের প্রয়োজনে তাকে এনেছি। বিদেশে থাকা অবস্থায় তাকে সভাপতি নির্বাচিত করি। তখন যেমন দলের মধ্যে এ পদের যোগ্য প্রার্থী ছিল না, এখনো নেই। দলের স্বার্থেই তাকে বারবার সভাপতি করা হয়েছে।
আমির হোসেন আমু: দেখুন, শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সব ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি দলের মধ্যে যেমন ঐক্য, সুসংহত প্রতিষ্ঠা করেছেন তেমনি দেশকেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনা না থাকলে আওয়ামী লীগ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। দল ভাঙবে এটি এখন আমরা কল্পনাও করি না। শেখ হাসিনা বেঁচে থাকা অবস্থায় আমরা আসলে বিকল্প কোনো চিন্তা করতে পারি না।
আমির হোসেন আমু: ওবায়দুল কাদের দল ভালোভাবে পরিচালনা করছেন বলে মনে করি। তাকে সমর্থন করি আমি। ওবায়দুল কাদের সাহেবের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। আল্লাহ তাকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছেন। সুস্থ হওয়ার পরে তিনি যেভাবে বক্তব্য, প্রোগ্রাম করে বেড়াচ্ছেন তাতে দলের মধ্যে আস্থা আরও বেড়েছে। বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ করছেন। কাউন্সিল দিচ্ছেন। কমিটি দিচ্ছেন। তার বক্তব্য শুনলে মনে হয় না অসুস্থ।
আমির হোসেন আমু: সুজিত রায় নন্দী মেধাবী ও পরিশ্রমী। তার দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রাপ্য ছিল। ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন। এটি ভালো খবর দলের জন্য। দলের জন্য জালালের ত্যাগ অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জালাল যে ভূমিকা রেখেছেন, তা জাতি মনে রেখেছে। তার রাজনৈতিক কোনো ছন্দপতন ঘটেনি। গাফিলতি ছিল না। অন্যরাও সঠিকভাবে মূল্যায়িত হয়েছেন বলে মনে করি। সব মিলে নতুন কমিটি দলকে আরও শক্তিশালী, বেগবান করবে। আমি তাদের সাধু্বাদ জানাচ্ছি।