বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল ভারতের জন্য উদ্বেগের নয়: শশী থারুর

image-836999-1723453931.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা ও লোকসভার সদস্য শশী থারুর বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তার দেশের সরকারের প্রশংসা করেছেন। তিনি হাসিনাকে ভারতের বন্ধু বলেও আখ্যা দেন।

সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা এমন মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, প্রতিবেশী দেশে ক্ষমতার পালাবদল ভারতের জন্য কোনোভাবেই উদ্বেগের বিষয় নয়।

শশী থারুরের কাছে সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশের উন্নয়ন কীভাবে ভারতের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ককে প্রভাবিত করে? জবাবে তিনি বলেন, আমাদের মৌলিক স্বার্থ বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ যা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে নিহিত। আমাদের মৌলিক প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল কামনা করা। সম্পর্কের প্রশ্নে রাষ্ট্র দ্বিতীয় এবং নেতৃত্ব তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আছি, যেমনভাবে ১৯৭১ সালে তাদের সাথে ছিলাম। ভালো এবং খারাপ  মুহূর্তে আমরা তাদের সাথে আছি। তাদের সরকার যদি আমাদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ নাও হয় তবুও আমরা বাংলাদেশের জনগণের সাথে আছি। ভবিষ্যতেও এই সম্পর্কের অবনতি হওয়া উচিত নয়।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তাতে ভারতের উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করেন সাবেক এই কূটনীতিক।

শশী থারুর বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমি মনে করি তাকে জামায়াতে ইসলামি বা পাকিস্তানি আইএসআই-এর ঘনিষ্ঠ ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে তিনি কিছুটা ওয়াশিংটনপন্থী।

বাংলাদেশের চলমান ঘটনাগুলো নয়াদিল্লি-ঢাকা সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলতে পারে, এর জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করা আমাদের মৌলিক চাহিদার মতো। আমাদের সবচেয়ে প্রাধান্যের বিষয় হলো বাংলাদেশি নাগরিকদের মঙ্গল যাতে হয়, সে দিকে নজর দেওয়া। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আছে রাষ্ট্র এবং সুনির্দিষ্ট কোনো নেতা।

ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগ সবসময়ই ছিল পাকিস্তান ও চীন। এই অঞ্চলে তারা ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সহিংস বিক্ষোভের কিছু ঘটনায় পাকিস্তানি আইএসআইয়ের হাত থাকতে পারে। চীনও এই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। তবে ড. ইউনূস শান্তির কথা বলেছেন, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার আহ্বান জানিয়েছেন।’

শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমরা যদি শেখ হাসিনাকে সাহায্য না করতাম তাহলে এটা ভারতের জন্য কলঙ্কজনক হতো।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা কতক্ষণ ভারতে থাকতে চান তা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়াই ভালো। আপনি অতিথিকে ডেকে এনে তিনি কখন বাড়ি ফিরবেন, তা জিজ্ঞেস করতে পারেন না।’

নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে শেখ হাসিনার পাশে দাঁড়ানোয় মোদি সরকারের প্রশংসাও করেন শশী থারুর।

Share this post

scroll to top