‘ফাঁসি দিলে দিন’

image-836264-1723292424.jpg

ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। এমনটাই জানিয়েছে তদন্তকারীরা। তবে অপরাধের কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে তার মধ্যে কোনো অপরাধবোধ নেই বলেই জানান তদন্তকারীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, আরজি কর-কাণ্ডে গ্রেফতারকৃত যুবক পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাকে শুক্রবার রাতে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে শনিবার সকালে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

জানা যায়, শুক্রবার ভোরে ওই হাসপাতালে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল অভিযুক্তকে। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট তিনি ভেতরে ছিলেন। সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়ার কারণে হাসপাতালে ঢুকতে বা বের হতে তার সমস্যা হয়নি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে অভিযুক্ত যুবক একবার হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। তার পর বেরিয়ে মদ পান করেন। পরে মত্ত অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে আবার হাসপাতালে ঢোকেন। প্রবেশের সময়ে তার গলায় একটি ব্লুটুথ হেডফোন দেখা যায়, বের হওয়ার সময়ে সেটি ছিল না। পরে ওই হেডফোনেরই ছেঁড়া অংশ উদ্ধার করা হয় ঘটনাস্থল থেকে। ওই হেডফোনের সূত্রে এবং সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

তদন্তকারীদের সূত্রে আরও জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত যুবকের মোবাইল ফোনে রাখা ছিল পর্নোগ্রাফির বহু ভিডিও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত যুবকের মানসিক বিকৃতির সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানান, গ্রেফতারের পরেও নিজের কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেননি অভিযুক্ত। বরং এখনও তার মেজাজ উদ্ধতই রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে ওই নারী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, তার দুচোখ থেকে রক্ত ঝরছিল। হাত, আঙুল, পা, পেট-সহ দেহের নানা জায়গায় ছিল আঘাতের চিহ্ন। অপরাধের আগে তার ওপর নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়েছিল বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সর্বত্র উঠছে একটাই দাবি— ‘বিচার চাই’। এমন প্রেক্ষাপটে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের এই ক্ষোভ সঙ্গত। তিনি তাদের সঙ্গে একমত।

মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, কেউ এ ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা না-রাখতে পারলে যে কোনো এজেন্সিকে দিয়ে এর তদন্ত করাতে পারেন। তাতে রাজ্য সরকারের কোনো আপত্তি নেই। কারণ সরকারের গোপন করার কিছু নেই।

এদিকে শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

Share this post

scroll to top