ডেস্ক রিপোর্ট: তাইওয়ানে আছড়ে পড়েছে শক্তিশালী টাইফুন ‘কং-রে’। এর আগেই সব শহর ও কাউন্টিতে এক দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর্থিক বাজার বন্ধ করা হয়েছে এবং শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়। ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঝড়ের আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়। অবশেষে সুপার টাইফুন কং-রে আজ তাইওয়ানে আড়ছে পড়েছে।
রাজ্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলেছে, প্রচণ্ড বাতাস এবং মুষলধারে বৃষ্টিসহ দ্বীপে আঘাত হেনেছে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়টি। দেশটির সেন্ট্রাল ওয়েদার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে টাইতুং কাউন্টির চেংগং শহরের পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়ে কং-রে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যৌথ টাইফুন সতর্কীকরণ কেন্দ্র (জেটিডাব্লিউসি) অনুসারে, কং-রে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে (১২৫ মাইল প্রতি ঘণ্টায় ) আছড়ে পড়ে। যা ক্যাটাগরি ৩ হারিকেনের সমতুল্য।
বুধবার রাতে একপর্যায়ে সুপার টাইফুনটি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়লেও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের ঝুঁকি অনুসারে ২৫০ কিলোমিটারের বেশি (১৫৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা) বেগে ক্যাটাগরি-৪ হারিকেনের সমতুল্য শক্তিশালী ছিল। তাইওয়ানের আবহাওয়া প্রশাসন বলেছে, ১৯৯৬ সালের পর দ্বীপে আঘাত হানা সবচেয়ে বড় টাইফুন হবে কং-রে।
প্রশাসনের পূর্বাভাস প্রদানকারী জিন হুয়াং বলেছেন, পূর্ব উপকূলে আঘাত হানার পর এটি তাইওয়ান প্রণালির দিকে চলে যাবে। এরপর একটি দুর্বল ঝড়ে পরিণত হবে, তবে দ্বীপজুড়ে ব্যাপক বাতাসের কারণে মানুষকে ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ঝড়ের আকার অনেক বড় এবং বাতাস বেশি।
প্রশাসনের মতে, উপকূলীয় অঞ্চলে ধ্বংসাত্মক বাতাসসহ পূর্ব তাইওয়ানে ১.২ মিটার (৩.৯ ফুট) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্ধার প্রচেষ্টায় সাহায্যের জন্য ৩৬ হাজার সেনাকে প্রস্তুত থাকতে বলেছে। এখন পর্যন্ত এক হাজার ৩০০ জনকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে সরকার জানিয়েছে।
বিশ্বের বৃহত্তম চিপমেকার এবং অ্যাপল ও এনভিডিয়ার মতো সংস্থাগুলোর প্রধান সরবরাহকারী তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কো জানিয়েছে, তারা কারখানা এবং নির্মাণ সাইটে টাইফুন সতর্কতা মেনে চলছে।
এদিকে তাইওয়ানের পরিবহণ মন্ত্রণালয় বলেছে, সব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ও দূরবর্তী দ্বীপগুলোতে ১৩৯টি ফেরি পরিষেবাসহ ২৯৮টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তাইওয়ানের উচ্চ গতির রেল তাদের পরিষেবা কমিয়ে দিয়েছে।
সরকার বলেছে, রাজধানী তাইপেইতে সাবওয়ে সিস্টেমের ওভারগ্রাউন্ড অংশগুলো কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। পাহাড় ও উপকূল এলাকা থেকে মানুষকে দূরে থাকতে সতর্ক করেছে সরকার।