খুলনায় কাফনের কাপড় পাঠিয়ে ১২ শিক্ষক-কর্মচারীকে হুমকি

untitled-1-1711338557-2.jpg

দর্পন রিপোর্ট: খুলনায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে ১২ শিক্ষক-কর্মচারী-কর্মকর্তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কাফনের কাপড় স্টাপলার করা ওই চিঠিতে লেখা রয়েছে ‘প্রস্তুত থাকিস’।

রোববার (২৪ মার্চ) বিকেলে খুলনা সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ১২ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী পৃথক পৃথক খামে সুন্দরবন কুরিয়র সার্ভিসের মাধ্যমে ওই চিঠি হাতে পেয়েছেন। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় ওই কলেজের চিফ ইনস্ট্রাক্টর মো. রিয়াজ শরীফ নগরীর আড়ংঘাটা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

চিঠির মাধ্যমে হুমকি পাওয়া শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন- কলেজের চিফ ইনস্ট্রাক্টর মো. রিয়াজ শরীফ, ইনস্ট্রাক্টর সৈয়দ মো. কামাল উদ্দিন, ইনস্ট্রাক্টর মো. মাসুদুল ইসলাম, ইনস্ট্রাক্টর মো. মাহাবুবুর রহমান, ইনস্ট্রাক্টর মো. জোবায়দুর রহমান, ইনস্ট্রাক্টর মো. মারুফ আহমেদ, ইনস্ট্রাক্টর মো. আব্দুল হামিদ, ইনস্ট্রাক্টর মো. হযরত আলী বুলেট, ইনস্ট্রাক্টর উন্মেহাবিবা ইসলাম, ইনস্ট্রাক্টর পলক কুমার বিশ্বাস, অফিস সহকারী মো. মনিরুল হক তালুকদার (রাজ) ও ড্রাইভার মো. আমিনুর সরদার।

কলেজের অফিস সহকারী মো. মনিরুল হক তালুকদার (রাজ) জানান, এই চিঠি পাওয়ার পর আমরা সবাই ভীত ও আতঙ্কিত।

চিফ ইনস্ট্রাক্টর মো. রিয়াজ শরীফ অভিযোগ করেন, রোববার দুপুর দেড়টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তিনিসহ মোট ১২ জনের কাছে ফুলবাড়ীগেট সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে চিঠি আসার খবর দেওয়া হয়। চিঠি সংগ্রহ খুলে তারা দেখতে পান প্রত্যেকের চিঠিতে একটি সাদা কাগজে কলম দিয়ে লেখা ‘প্রস্তুত থাকিস’। একইসঙ্গে প্রত্যেক চিঠিতে সাদা কাপড়ের একটি টুকরো স্টাপলার মেশিন দিয়ে পিনআপ করা।

প্রতিটিতে চিঠির খামে প্রেরকের স্থানে খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, লোন বিভাগ, সিটি ব্যাংক এনএ, ১০৯ গুলশান অ্যাভিনিউ, ঢাকা ১২১২ এই ঠিকানা উল্লেখ করা আছে। সেখানে একটি মোবাইল নম্বরও উল্লেখ করা আছে।

রিয়াজ শরীফ ওই জিডিতে আরো উল্লেখ করেন, এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে অফিসের অধিকাংশ সবাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। সেই সূত্র ধরে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মারুফ আহমদকে (ইন্সট্রাক্টর) অজ্ঞাতনামা লোক দ্বারা হত্যার উদ্দেশে গুরুতর আহত করানো হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি মারুফ আহমদ (ইন্সট্রাক্টর) কাজী বরকতুল ইসলামকে সন্দেহপূর্বক বিবাদী করে আড়ংঘাটা থানায় একটি মামলা করে।

জিডি তদন্তকারী কর্মকর্তা আড়ংঘাটা থানার এস আই লুৎফুল হায়দার বলেন, প্রতিষ্ঠানের ১২জন শিক্ষককে কুরিয়ার যোগে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির মধ্যে একটি সাদা কাগজ যাতে লেখা আছে প্রস্তুত থাকিস এবং সাদা একটি কাপড়ের টুকরা সেটা কাফনের কাপড় কিনা তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।

আড়ংঘাটা থানার ওসি মো. হাসান আল মামুন বলেন, ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে হুমকি প্রদান করা হয়েছে। চিঠিতে লেখা ছিল ‘প্রস্তুত থাকিস’। আর কিছুই লেখা নেই। সঙ্গে স্টাপলার করে সাদা কাপড়ের টুকরা দেওয়া হয়েছে, যেটা কাফনের কাপড় বোঝাতে চেয়েছে। এটি ভীতি প্রদর্শনের জন্য করা হয়েছে। এ বিষয়ে কলেজের চিফ ইনস্ট্রাক্টর মো. রিয়াজ শরীফ সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে শিক্ষকদের বিরোধ চলে আসছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। যে কুরিয়ার সার্ভিসে এসেছে আমরা তদন্ত করছি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

Share this post

scroll to top