খুলনার দর্পণ ডেস্ক : কয়েক শতাব্দী ধরে ভারতের মধ্য প্রদেশের ধার জেলার পাদলোয়া গ্রামের বাসিন্দারা হাতের তালুর মাপের কয়েকটি গোলাকার ‘পাথর’ পূজা করত। কিন্তু, লাখনাউয়ের কয়েকজন বিজ্ঞানী সেখানে আসার পরই শতাব্দী প্রাচীন এই ধারণা ভেঙে গেল। জানা গেল, এত বছর ধরে যে পাথরের মতো বস্তুগুলোকে তারা দেবতাজ্ঞানে পূজা করে আসছেন, সেগুলো আসলে ডাইনোসরের ডিম!
জানা গেছে, চাষের জমি খুঁড়তে গিয়ে ওই পাথরের মতো বস্তুগুলো পেয়েছিলেন ভেস্তা মন্ডলোই নামে এক কৃষকের পূর্বপুরুষরা। সেই থেকে কয়েক শতাব্দী ধরে ওই গোলাকার বস্তুগুলোকে ‘কাঁকর ভৈরব’ বা মাটির দেবতা হিসেবে পূজা করত তার বাপ-ঠাকুর্দারা। শুধু ভেস্তা মন্ডলোই-এর পরিবারই নয়, আশপাশের বহু মানুষই মনে প্রাণে বিশ্বাস করত, ওই দেবতারা তাদের চাষাবাদ এবং গবাদিপশুর রক্ষা করে, প্রতিটি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য করে।
নর্মদা উপত্যকা অঞ্চলে, ভেস্তা মন্ডলোই-এর পরিবারের মতো অনেক পরিবারেই একই ধরনের গোলাকার পাথরের মতো বস্তু রয়েছে। সকলেই গোলাকার বস্তুগুলোকে পারিবারিক দেবতা বা গ্রামের কূলদেবতা হিসাবে পূজা করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের শুরুর দিকে, এই অঞ্চলে লাখনাউয়ের ‘বীরবল সাহানি ইনস্টিটিউট অব প্যালোওসায়েন্স’ থেকে বিজ্ঞানীদের একটি দল এসেছিলেন। ওই গোলাকার পাথরের মতো বস্তুগুলে তারা পরীক্ষা করে দেখেন। আর সেই বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাতেই প্রমাণ হয়েছে, সেগুলো আসলে ডাইনোসরের ডিম। আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে টাইটানোসরাসের ডিম। লক্ষ লক্ষ বছর আগে সেগুলো পাথরের মতো জীবাশ্মে পরিণত হয়েছিল। সেগুলোই মাটি খুঁড়ে পেয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।
বস্তুত, শুধু পদালোয়া গ্রাম নয়, গোটা ধার জেলাই ডাইনোসরের ডিম পাওয়ার জন্য পরিচিত। অতীতেও এখান থেকে অন্তত ২৫৬টি ডাইনোসরের ডিম পাওয়া গিয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই অঞ্চলে অনুসন্ধান চালান বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে জুরাসিক যুগে, মধ্য প্রদেশের নর্মদা উপত্যকা এলাকা ছিল টাইটানোসরাসের ডিম পাড়ার জায়গা। প্রায় ৬৫ কোটি বছর আগে এই অঞ্চলে ঘুরে বেড়াত বিশালাকৃতির টাইটানোসরাসরা।