খুলনার দর্পণ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর। গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কিসিঞ্জারের প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থা কিসিঞ্জার অ্যাসোসিয়েটস তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় সময় বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে তার নিজ বাড়িতে মারা গেছেন জার্মান বংশোদ্ভুত সাবেক এ কূটনীতিক।
হেনরি কিসিঞ্জার জন্মেছিলেন নাৎসি জার্মানিতে ১৯২৩ সালের ২৭ মে। তবে ১৫ বছর বয়সেই পরিবারসহ নিউইয়র্কে পাড়ি জমান কিসিঞ্জার। পরিবারের আর্থিক অবস্থা তখন নিতান্ত করুণ, তাই বাধ্য হয়ে কিশোর কিসিঞ্জারকে শেভিং ব্রাশের ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করতে হয়। পাশাপাশি অবশ্য তিনি জর্জ ওয়াশিংটন হাই স্কুলে নিয়মিত রাত্রীকালীন পড়া চালিয়ে গিয়েছিলেন।
সিটি কলেজ অভ নিউইয়র্কে পড়ার সময় ১৯ বছর বয়সে কিসিঞ্জারকে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য। প্রথমে তিনি ফ্রান্সে একজন রাইফ্যালম্যান এবং পরে জার্মানিতে জি-টু ইন্টেলিজেন্স অফিসার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি সেনাবাহিনীর কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স কোরের সাথে কাজ করেন।
বিশ বছর বয়সে নিজের নাম পাল্টে হেইঞ্জ কিসিঞ্জার থেকে হয়ে যায় হেনরি কিসিঞ্জার। সাথে সাথে জুটে যায় মার্কিন নাগরিকত্বও।
হেনরি কিসিঞ্জারের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর সাথে ভিয়েতনাম জড়িয়ে আছে ওতপ্রোতভাবে। ভিয়েতনামের যুদ্ধে দক্ষিণ ভিয়েতনামের পক্ষে যুদ্ধে নেমেছিল আমেরিকা। ভিয়েতনাম প্রসঙ্গে হেনরি কিসিঞ্জারকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়েছেন অনেক সমালোচক।
১৯৭৩ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হন হেনরি কিসিঞ্জার। এই সময় তার ইচ্ছাতেই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে পরিবর্তন আসে। ‘শাটল ডিপ্লোম্যাসি’ (একাধিক রাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা) নামে পরিচিত এই কূটনৈতিক প্রয়াসে কিসিঞ্জার তৃতীয় ব্যাক্তি হিসেবে আরব দেশগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিরসনসম্পর্কিত আলোচনায় সহায়তা করেন। এই লক্ষ্যে কিসিঞ্জার মিশর, ইজরায়েল, সিরিয়া ইত্যাদি আরবদেশে অনেকবার চক্কর দিয়েছিলেন। প্রায় এগার বার এরকম ‘শাটল মিশন’ পরিচালনা করেন কিসিঞ্জার, যার মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ মিশনটির স্থায়িত্ব ছিল এক মাসের মতো।
হেনরি কিসিঞ্জার মারা গেছেন
