জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহায়তার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

Untitled-5-copy-14.jpg

খুলনার দর্পণ ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে আন্তর্জাতিকভাবে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) সদর দফতরে তিন দিনব্যাপী ১১৪তম অধিবেশনে ‘মানব গতিশীলতার ওপর জলবায়ুর প্রভাব : সমাধানের জন্য বৈশ্বিক আহবান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যৎ মানব সঙ্কটের মুখ থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য মানুষের গতিশীলতার বিষয়ে পাঁচটি বিষয়ের দিকে নজর দেয়া দরকার।
তিনি বলেন, বেশিরভাগ জলবায়ু স্থানচ্যুতি জাতীয় সীমানার মধ্যে এবং কিছু ভয়ানক পরিস্থিতিতে সীমান্তের ওপারে ঘটে। এই ধরনের পরিস্থিতি যাতে মানবিক সংকটে পরিণত না হয় সে জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সংহতি প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যারা বাস্তুচ্যুত বা আটকে পড়েছেন তাদের মৌলিক পরিষেবা, সামাজিক সুরক্ষা এবং জীবিকার বিকল্পগুলিতে প্রবেশাধিকার থাকা দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, এটি অনুমান করা হয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তন ২০৫০ সালের মধ্যে ২১৬ মিলিয়ন লোককে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। এর মধ্যে ৪০ মিলিয়ন এককভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় থাকবে। বাংলাদেশে আমাদের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ উপকূলীয় অঞ্চলে বাস করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ, ঘন ঘন বন্যা এবং প্রবল ঘূর্ণিঝড় তাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। এই ধরনের স্থানচ্যুতিগুলি আমরা যা ভাবি তার চেয়ে দ্রুত গতিতে ঘটছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মানুষের চলাফেরায় যে প্রভাব পড়ছে তা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছেন।
এগুলো হচ্ছে-
প্রথমত, আমাদের নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসনের জন্য গ্লোবাল কমপ্যাক্টের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অধিকারভিত্তিক পদ্ধতিতে মানব গতিশীলতার ওপর জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলা করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, জলবায়ু অভিবাসীদের অভিঘাত এবং ক্ষতির প্রসঙ্গে-নির্দিষ্ট সমাধান খুঁজে বের করার জন্য ‘ক্লাইমেট জাস্টিজ লেন্সের’ মাধ্যমে আমাদের পরিস্থিতি বিবেচনা করা উচিত।
তৃতীয়ত, অভিবাসনকে জলবায়ু অভিযোজন কৌশল হিসেবে দেখার জন্য আমাদের স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে প্রস্তুত হতে হবে, যেখানে এটি সর্বোত্তম সম্ভাব্য সমাধান হিসাবে প্রমাণিত হয়।
চতুর্থত, জলবায়ু অভিবাসী, বিশেষ করে নারী, শিশু এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য, তাদের পুনরুদ্ধার করার জন্য আমাদের বিদ্যমান আন্তর্জাতিক সুরক্ষা মানগুলো পর্যালোচনা করতে হবে।
পঞ্চমত, সংকীর্ণ রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে এটির জন্য একটি গঠনমূলক অবস্থান তৈরি করার জন্য মানব গতিশীলতার ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে আমাদের ভালভাবে গবেষণা করা ডেটা এবং প্রমাণগুলোতে বিনিয়োগ করা উচিত।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top