ইস্টার্ণ জুট মিল যেনো গবাদি পশুর খামার

khulna-2307250515.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক…….

বাংলাদেশ জুট কর্পোরেশন-বিজেএমসি’র নিয়ন্ত্রিত খুলনা জোনের ইস্টার্ণ জুট মিলটি এখন গরু বাছুরের খোয়াড়ে পরিণত হয়েছে। মিলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে যে দিকে চোখ যায় গরু-বাছুর ও ছাগল ভেড়ার পালের ছোটাছুটির দৃশ্য চোখে পড়ে। বোঝার উপায় নেই, এটি কোন রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান।

এই মিলের প্রকল্প প্রধান ড. জি এ এম মাহাবুবুর রশীদ জুলফিকার এই সকল গরু বাছুরের মালিক। তার এই সব পোষা গবাদী পশুর খাবারসহ নানা কিছুর আনা-নেওয়া করা হয় মিলের গাড়ীতে। এমনকি প্রকল্প প্রধানের ব্যবহারের প্রাইভেট কারটিতে ছাগল আনা নেওয়া করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ইস্টার্ণ জুট মিলের প্রকল্প প্রধান জুলফিকার দীর্ঘদিন যাবৎ মিলটিতে গরু বাছুরের অভয়ারণ্য হিসেবে তৈরি করেছেন। ড. জুলফিকারের স্ত্রী খুলনার শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের চাকরি করেন। প্রতিদিনই প্রকল্প প্রধানের জন্য বরাদ্দকৃত গাড়ীটি তার স্ত্রীর অফিসে যাতায়াতের কাজেও ব্যবহার হয়। এখানেই শেষ নয়, প্রকল্প প্রধানের সরকারি প্রাইভেট কারটিতে ছাগল তুলে হাটে নিয়ে যাওয়া হয় বিক্রির জন্য। এছাড়া ছাগলের খাবার হিসেবে কাঠালের পাতা গাড়ির ব্যাক ডালায় আনা হয় বিভিন্ন স্থান থেকে।

এদিকে, মিলের নিরাপাত্তা প্রহরীসহ মালিদের দিয়ে ছাগল গরুর রাখালের কাজ করান ওই প্রকল্প প্রধান। অভিযোগ রয়েছে, কেউ কাজ করতে না চাইলে, চাকরি থেকে ছাঁটাইয়ের হুমকি দেন জুলফিকার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক এক নিরাপত্তা প্রহরী বলেন, আমি এই মিলে চাকরি নিয়েছি নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে, অথচ আজ আমাকে গরু বাছুরের পায়খানা প্রসাব পরিস্কার করতে হয়।

বিদ্যুৎ বিল দেওয়া নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। মিলের প্রতিমাসের বিদ্যুৎ বিলের সাথে জুলফিকারের বাংলোর হিটার, এসি ও পানির মটরের বিদ্যুৎ বিল যোগ করে দেওয়া হয়। আর জুলফিকার মাস গেলে নামমাত্র বিদ্যুৎ বিল দেন। অন্যদিকে মিলের অভ্যন্তরে জুলফিকারের কথার বাইরে গেলে স্টাফদের অফিসিয়াল শাস্তি দেওয়া হয়। ফলে অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না।

ইস্টার্ণ জুট মিলের সাবেক কর্মকর্তা ইমদাদ হোসেন বলেন, মিলের অভ্যন্তরে কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে জুলফিকার স্যারের রক্তচক্ষুর শিকার হতে হয়।

অভিযোগের বিষয়ে প্রকল্প প্রধান ড. জি এ এম মাহাবুবুর রশীদ জুলফিকার বলেন, ছাগল আমার বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো, তখন আমি প্রাইভেটকারে ছিলাম। এছাড়া অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোনটি কেটে দেন।

এ বিষয়ে বিজেএমসি’র চেয়ারম্যান আনিস মাহমুদ মুঠোফোনে বলেন, প্রকল্প প্রধানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top