১৬ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করবে বিপিসি

top-1-2301140508-2307250305.jpg

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট…
দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ১৬ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল আমদানি করবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় ২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য এই পরিমাণ জ্বালানি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ১২ হাজার ৮৫০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) দেশের জ্বালানি চাহিদা পূরণের জন্য প্রতি বছর বিভিন্ন দেশের ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান যথা: ইএনওসি, পেট্রো চায়না, বিএসপি, ইউনিপেক, পিটিএল, সিআই, পিটিটিটি, আইওসিআই, ও কেপিসি থেকে মেয়াদি চুক্তির আওতায় জি-টু-জি ভিত্তিতে সমুদ্রপথে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে। এছাড়াও, নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল), ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল (ডিজেল) আমদানি করা হয়। ২০২৩ সালে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর তারিখের সভায় অনুমোদিত হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে জি-টু-জি ভিত্তিতে বিভিন্ন গ্রেডের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির জন্য সরবরাহকারী বিভিন্ন দেশের ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রিমিয়াম নেগোশিয়েশন সভায় অংশগ্রহনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কেপিসি জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য প্রিমিয়াম নেগোসিয়েশন সভায় অংশগ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করে। অবশিষ্ট ৭টি প্রতিষ্ঠান জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে সরবরাহতব্য পরিমাণ ও প্রিমিয়াম নেগোসিয়েশনের জন্য ভিডিও করফারেন্সের মাধ্যমে গত ১৯-২১ জুন তারিখে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণ করে।

সূত্র জানায়, জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য প্রিমিয়াম নেগোসিয়েশন সভায় অংশগ্রহণকারী ৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইওসিএল, ভারত নেগোসিয়েশন সভায় প্রাপ্ত সর্বনিম্ন প্রিমিয়ামের সঙ্গে ম্যাচিংয়ে অপারগতা প্রকাশ করে। অবশিষ্ট ৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নেগোসিয়েশন সভায় সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম প্রস্তাবকারী এবং সর্বনিম্ন প্রিমিয়ামের সঙ্গে ম্যাচিংয়ে সম্মতি জ্ঞাপনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থান- (ক) ইউনিপেক গ্যাস অয়েল (ডিজেল), জেটএ-১ (এভিয়েশন ফুয়েল), মোগ্যাস (অকটেন), ফার্নেস অয়েল ও মেরিন ফুয়েলের জন্য সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম প্রস্তাব করে। (খ) বিএসপি ৪টি পণ্য (জেডএ-১, মোগ্যাস, ফার্নেস অয়েল ও মেরিন ফুয়েল) এর জন্য সর্বনিম্ন প্রিমিয়াম প্রস্তাব করে। (গ) ইএনওসি গ্যাস অয়েল এবং ফার্নেস অয়েল সরবরাহে নেগোসিয়েশনকৃত সর্বনিম্ন প্রিমিয়ামের সঙ্গে ম্যাচিংয়ে সম্মত হয়। (ঘ) পেট্রোচায়না গ্যাস অয়েল, জেট ফুয়েল, মোগ্যাস ও ফার্নেস অয়েল সরবরাহে সর্বনিম্ন প্রিমিয়ামের সঙ্গে ম্যাচিংয়ে সম্মত হয়। (চ) পিটিএলসিএল গ্যাস অয়েল, জেটএ-১, ফার্নেস অয়েল ও মেরিন ফুয়েল নেগোসিয়েশনকৃত প্রিমিয়ামে সরবরাহে সম্মত হয়।

নেগোসিয়েশন অনুযায়ী জি-টু-জি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত সর্বনিম্ন দর মোতাবেক জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য প্রিমিয়াম নির্ধারণ করা হয়, গ্যাস অয়েল প্রতি ব্যারেল ১২.০৩ মার্কিন ডলার, জেটএ-১ প্রতি ব্যারেল ১২.৮০ ডলার মোগ্যাস (অকটেন) প্রতি ব্যারেল ১৩.৮০ ডলার, ফার্নেস অয়েল প্রতি ব্যারেল ৫৮.৫০ ডলার এবং মেরিন ফুয়েল প্রতি ব্যারেল ০.৫ শতাংশ ‘এস’। কেপিসি কুয়েত ও আইওএল ভারত ছাড়া বাকি ৬টি দেশ থেকে মোট ১৬ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, নেগোসিয়েশন ও পরবর্তীতে সম্মত বা প্রস্তাবিত প্রিমিয়াম এবং রেফারেন্স প্রাইস আন্তর্জাতিক দর অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে গ্যাস অয়েল প্রতি ব্যারেল ৮৭,৫৫০ মার্কিন ডলার, জেটএ-১ প্রতি ব্যারেল ৮৭, ২০০ ডলার মোগ্যাস প্রতি ব্যারেল ৮ ডলার, মেরিন ফুয়েল প্রতি ব্যারেল ৫৬১.১১০ ডলার। আমদানিতব্য ১৬ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ১,১৭৮ মিলিয়ন ৯৭৮ হাজার ১৭২ ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্র্রায় ১২ হাজার ৮৫০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বিপিসি’র তথ্য থেকে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য মোট ১৬ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এরমধ্যে গ্যাস অয়েল ১০ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন, জেডএ-১ ১ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন, ফার্নেস অয়েল ৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন, মোগ্যাস ১ লাখ মেট্রিক টন, মেরিন ফুয়েল ৬০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top