কেসিসি নির্বাচন: ৩৬ কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে ১৬৪ মামলা

Khulna-2306021017.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক…….

আসন্ন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ নিতে চাওয়া ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২৫টি। তিনি খালাস ও অব্যাহতি পেয়েছেন তিনটি মামলায়।একইভাবে অপর জামায়াত নেতা ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এস এম আজিজুর রহমান স্বপনের বিরুদ্ধে ১৪টি ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফ হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে।

১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মাস্টার মো. শফিকুল আলমের বিরুদ্ধে ১৩টি, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মশিউর রহমান রমজানের বিরুদ্ধে চারটি এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম পান্নার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা রয়েছে।

শুধুমাত্র জামায়াতের উল্লিখিত ৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধেই নয় খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া ৩৬ কাউন্সিলর প্রার্থীর নামে মামলা আছে মোট ১৬৪টি। বিএনপি-জামায়াতের ১১ নেতার বিরুদ্ধেই রয়েছে ১২০টি মামলা।

এসব মামলার অধিকাংশই বিস্ফোরক, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা। অন্য প্রার্থীদের নামে আছে হত্যা, নারী নির্যাতন, মাদকসহ বিভিন্ন মামলা।

২৬ জনের বিরুদ্ধে আগে মামলা ছিল ৬২টি। তাঁরা কেউ চার্জশিট থেকে অব্যাহতি, কেউ খালাস পেয়েছেন। কয়েকজনের নামে দায়ের হওয়া মামলার বিচার কার্যক্রম স্থগিত আছে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের হলফনামা পর্যালোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।

হলফনামায় দেখা গেছে, বিএনপি নেতাদের মধ্যে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতনের বিরুদ্ধে ১২টি, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শামসুল আলম মিল্টনের বিরুদ্ধে ১২টি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ফজলুল কবীর টিটোর বিরুদ্ধে ১৫টি, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশফাকুর রহমান কাকনের বিরুদ্ধে দুটি এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মাহবুব কায়সারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা আছে। এসব প্রার্থীর বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো বিচারাধীন। অপরদিকে, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী এস এম মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুটি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী ইব্রাহিম মার্শালের নামে একটি ও শেখ আবদুল হাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা বিচারাধীন আছে।

খুলনা সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে হত্যাসহ দুটি মামলা বিচারাধীন। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কবির হোসেন কবু মোল্লা দুটি মামলার আসামি, তার বিরুদ্ধে আগে ছিল আরও ৫টি মামলা।

নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফিরোজ আলম মাদক মামলার আসামি। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুলতান মাহামুদ পিন্টুর বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা মামলা, আগে ৬টি মামলা থেকে খালাস পান তিনি। এই ওয়ার্ডের তারেকের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে দুটি। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাহফুজ পারভেজ মুন্নার বিরুদ্ধে একটি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি মাদকসহ তিনটি মামলা এবং এ এস এম সায়েম মিয়া নারী নির্যাতন মামলার আসামি।

একইভাবে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের খান মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীর নামে একটি, নাসির সরদারের বিরুদ্ধে দুটি ও শেখ মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা বিচারাধীন। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শামীম পারভেজ হত্যাসহ তিনটি মামলার আসামি। একই ওয়ার্ডের প্রার্থী আওয়ামী লীগের ইউসুফ আলী খানের বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি মামলা।

১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইমরান হোসেন ও জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে একটি করে, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন বিপ্লবের বিরুদ্ধে একটি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ চলমান রয়েছে। ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া শেখ মো. গাউসুল আজমের বিরুদ্ধে বিস্ফোরকসহ চারটি মামলা বিচারাধীন।

২১ নম্বর ওয়ার্ডের ইমরুল হাসানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে রয়েছে দুটি মামলা, আগে ছিল আরও দুটি। এছাড়া চেক ডিজঅনার মামলায় তিনি সাজা খেটেছেন।

২২ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ মো. আনোয়ারুল কবির ফিরোজের বিরুদ্ধে চারটি, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের পিটু মোল্লা, আরিফ হোসেন মিঠু ও হাছান চানের বিরুদ্ধে রয়েছে একটি করে মামলা।

সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে শুধু ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী হোসনেয়ারার বিরুদ্ধে মামলা আছে দুটি। তিনি এর আগে আরও তিনটি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন।

মামলার বিষয়ে জামায়াত নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থী জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই মামলাগুলো করা হয়েছে। দায়ের হওয়া মামলার সঙ্গে আমাদের দলের নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই।’

৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন তোতন বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে মামলাগুলোর কোনোটিই ব্যক্তিগত নয়। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশের দায়ের করা মামলা।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top