প্রবাসী আয়ের পর রপ্তানি আয়েও হোঁচট

1683115752.webp

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট …..
এপ্রিল মাসে হোঁচট খেলো বৈদেশিক আয়ের প্রধান দুই খাত প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি নামল ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশে।

মার্চে এর হার ছিল ৮ দশমিক শুন্য ৭ শতাংশ।
এপ্রিলে প্রবাসী আয় কমে দাঁড়ালো ১৬৮ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলারে। যা আগের মাসে ছিল ২০২ কোটি মার্কিন ডলার।

বুধবার (৩ মে) এসব তথ্যসহ রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো। এর আগের দিন (২ মে) প্রবাসী আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, ঈদে লম্বা ছুটির কারণে রপ্তানি বন্ধ থাকা এবং গত কয়েক মাস ধরে রপ্তানি আয় ক্রমান্বয়ে কমছিল। এসব কারণে রপ্তানি আয় কমেছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ মাসে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ৫৬৭ কোটি ৭৬ লাখ বা ৪৫.৬৭৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম। গত ১০ মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭.৩১৪ বিলিয়ন ডলার।

গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৩.৩৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সে হিসেবে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫.৩৮ শতাংশ। তবে আগের মাসে (মার্চ) রপ্তানি আয়ের এই প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.০৭ শতাংশ।

দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ দখল করে আছে দেশের তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে হোঁচট খেলে এর ধাক্কা লাগে মোট রপ্তানি আয়ে। এপ্রিলে তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ে হোঁচটের ধাক্কা লেগেছে মোট রপ্তানি আয়ে। জুলাই-এপ্রিল ১০ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩৮.৫৭৭ বিলিয়ন ডলার। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯.০৯ শতাংশ বেশি। মার্চে প্রবৃদ্ধি ছিল ১২.১৭ শতাংশ।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে গত ১০ মাসের তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রা থেকেও পিছিয়েছে। ১০ মাসে কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ শতাংশ কম রপ্তানি হয়েছে। এ সময়ে কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮.১৭৭ বিলিয়ন ডলার।

মার্চে তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ১২.১৭ শতাংশ।

তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের এই হোঁচট গত কয়েক মাসের রপ্তানি হ্রাসের ধারাবাহিকতা ও ঈদের লম্বা ছুটির কারণে হয়েছে বলে মনে করছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমই) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই আমরা বলে আসছিলাম কার্যাদেশ কমে গেছে, রপ্তানি আয়ও কমবে। কমেছিলও। এরই ধারাবাহিকতায় রপ্তানি আয় কমেছে। আরেকটি কারণ হলো- ঈদের লম্বা ছুটি। এই ছুটিকালিন সময়ে রপ্তানি হয়নি। এ সময়ে ছুটি না থাকলে আরও এক বিলিয়ন বেশি রপ্তানি হতে পারতো।

তবে তৈরি পোশাক থেকে রপ্তানি আয়ের প্রকৃত চিত্র চলতি মাসে পাওয়া যাবে। কারণ মে মাসে এতো বেশি ছুটি নেই তৈরি পোশকি শিল্পে; বলেন বিজিএমইএ-এর এই পরিচালক।

এপ্রিল মাসের ২৩ তারিখে ঈদ হয়েছে। এর আগের দিন থেকে তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। ২ মে কারখানা খুলেছে। এ সময়ে উৎপাদন যেমন বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল রপ্তানিও।

বৈদেশিক মুদ্রার সবচেয়ে নির্ভরযোগ খাত হলো প্রবাসী আয়। চলতি অর্থবছরের দুই মাসে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকার পরই প্রবাসী আয় কম হতে থাকে। এ থেকে সরকার নানামুখি উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রবাসী আয় কিছুটা বাড়তে শুরু করে। কিন্তু ঈদের মাসে আবার প্রবাসী আয়ে থাক্কা লাগে। প্রবাসী আয় ব্যাংকিং চ্যানেলে আবার পাঠাতে ডলার প্রতি ১০৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০৮ টাকা পূণ:নির্ধারণ করে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top