১০০ টাকার ডাব যাদের ২০ টাকায় দেন খুলনার মুজিবর

1681982414.BG-1.jpg

ব্যুরো এডিটর ……
দরিদ্র, অসহায়, অসুস্থ ও বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে সাধারণত বিত্তবানরা দাঁড়ান। কিন্তু এর ব্যতিক্রম খুলনার ডাব বিক্রেতা মো. মুজিবর জোমার্দ্দার।

নিজে দরিদ্র হলেও দয়ার্দ্রতা ও সহানুভূতির কমতি নেই তার। বিশেষ করে অসহায় কেউ ডাব কিনতে এলে ১শ কিংবা ১২০ টাকার ডাব তিনি মাত্র ২০ টাকায় বিক্রি করেন।
খুলনা মহানগরীর নিউমার্কেট এলাকার এক নম্বর গেটের সামনে মানবিক এ ডাব বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।

তিনি দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামের শহিদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। প্রতিদিন ভৈরব নদ পার হয়ে খুলনার নিউমার্কেট এলাকায় ভ্যানে করে ডাব বিক্রি করতে আসেন। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি এখানে ডাব বিক্রি করেন। তার ভ্যানের সঙ্গে একটি কাগজে লিখে রেখেছেন মূল্য ছাড়ের কথা।

এ সময় তিনি বলেন, যদি কোন অসহায় মানুষ ডাব কিনতে আসে তাহলে তাদের কাছ থেকে ২০ টাকার ডাব বিক্রি করি। এছাড়া রোগী হলে পাঁচ টাকা ও রমজানে সবার জন্য পাঁচ টাকার ছাড়ে ডাব বিক্রি করছি। যদি কোন অসহায় ব্যক্তি ডাব নিতে আসে তাহলে ডিসি সাহেব এলেও আমি অসহায় ব্যক্তিকে আগে ডাব দিই।

এত দামের ডাব ২০ টাকায় বিক্রি করে আপনি কিভাবে পুষিয়ে নেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে পুষিয়ে দেয়। আমার আব্বা বলতেন সৎভাবে চলবা তোমার ভাতের অভাব হবে না। তাই হচ্ছে।

অসহায় মানুষ চেনেন কি করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে স্বীকার করবে অসহায় সেই অসহায়। তদন্ত করবে আল্লাহ পাক। ডাব ভালোই বিক্রি হয়। রোজায় তেমন অসহায় লোক আসে না। বিকেলে ৪-৫ জন আসে। আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন অসহায়দের কাছে এভাবে কম মূল্যে ডাব বিক্রি করবো।

ডাব কিনতে আসা পুলিশ সদস্য আব্দুল্লাহ বলেন, মানবিক এই ডাব বিক্রেতা মুজিবর দীর্ঘ বছর ধরে নিউমার্কেট এলাকায় অসহায়, দুস্থ, রোজাদার ও রোগীদের জন্য ছাড়ে ডাব বিক্রি করেন। তার এ উদ্যোগকে সবাই প্রশংসা করেন। আমি নিজেও তার কাছ থেকে মাঝেমধ্যে ডাব কিনি।

কয়েকদিন ধরে খুলনায় তাপদাহ চলছে। ফলে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই তাপমাত্রার সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডাবের দাম। বর্তমানে আকারভেদে প্রতি পিস ডাব ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক এলাকায় টাকা হলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ডাব। সেখানে মুজিবরের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে ডাব খেতে পেরে খুশি কর্মজীবী ও অসহায় মানুষগুলো।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top