কলম মাটিতে পুঁতলেই হবে গাছ

top-2304050415.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক…..

কাগজ, কলমের শীষ ও বীজ দিয়ে বিশেষ এক ধরনের কলম উদ্ভাবন করেছেন শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান রিফাত। তিনি খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়রিং বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। পরিবেশবান্ধব এই কলম দিয়ে লেখা শেষে সেটি মাটিতে পুঁতলেই হবে গাছ।

রিফাতের তৈরি এই কলম একদিকে লেখার কাজ করবে, অন্যদিকে সবুজ বনায়নে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। রিফাত খুলনা মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের লবণচরা এলাকার বাসিন্দা।

এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসান রিফাত বলেন, আর্ট পেপার বা পত্রিকার কাগজ, আঠা, কলমের শীষ ও গাছ বা সবজি বীজ দিয়ে বানানো হয়েছে এই কলম। এতে খরচ পড়েছে ২-৩ টাকা। বাজারে যেসব কলম পাওয়া যায় সেগুলো প্লাস্টিকের, আমার কলম ৯৫ শতাংশ কাগজ ও বীজ দিয়ে তৈরি।

এই কলম তৈরির উদ্দেশ্য সম্পর্কে রিফাত বলেন, এর মাধ্যমে তরুণ সমাজকে একটি বার্তা দেওয়া, যেন সবাই সবুজায়নের মধ্যে থাকে। অধিকাংশ মানুষ কিন্তু প্লাস্টিক বাসায় নিয়ে আসে এবং এটি পরিবেশকে দূষণ করছে। এই কলমটা সকলেই ব্যবহার করতে পারবে। কলমে আমি লেখেছি ‘সেভ ইওর আর্থ’। যখন কলম হাতে এই বার্তা যাবে, তখন সেই ব্যক্তি অন্তত একটি গাছ লাগাবে অথবা আমার এই কলমটি যদি ফেলেও দেয় তাহলে গাছ হবে।

তিনি বলেন, আমি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয়, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এমন কাজ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রত্যেক শূন্যস্থান পূরণ করতে হবে সবুজায়নের মাধ্যমে। আমি চাই, শিক্ষার্থীসহ সবাই এমন কলম বানানো ও ব্যবহারে এগিয়ে আসুক।

রিফাতের বন্ধু আবির ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকে যেসকল কলম ব্যবহার করে আসছি সেগুলো ফেলে দিলে পরিবেশের ক্ষতি করে। কারণ সেগুলো পচনশীল নয়। আমরা যতগুলো কলম ব্যবহার করি লেখা শেষে সবগুলোই কিন্তু ফেলে দেই। যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। রিফাত যে কলমটি তৈরি করেছে, এতে কাগজ, কলমের শীষ ও বীজ ব্যবহার করেছে। লেখা শেষে কলমটি ফেলে দিলে বা উল্টোভাবে পুঁতে দিলে গাছ হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল কবীর বলেন, পরিবেশ রক্ষার্থে রিফাতের এই কলম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি সবার মাঝে ছড়িয়ে দিলে বাংলাদেশে সবুজায়ন হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর গাছ লাগানোর প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

একই এলাকার বাসিন্দা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, কলমটি পচে যাওয়ার পর গাছ হচ্ছে। এটি যেমন অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করবে, তেমনই পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে সহায়তা করবে।

নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরিফ হোসেন মিঠু বলেন, রিফাত যে কাজটা করেছে, এটি আসলেই ব্যতিক্রমী কাজ। কলমে সুন্দর লেখা হয় এবং লেখা শেষে ফেলে দিলে পচে যাবে। বীজ বপন করলে গাছ হবে। এ বিষয়ে তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top