ব্রয়লার ২২০ টাকা, বেড়েছে সোনালি-লেয়ার মুরগির দাম

1680090741.chicken.jpg

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট…….
গত তিন-চারদিন ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে সোনালি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম। বুধবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমন তথ্যই মিলেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। গত তিন-চার দিন ধরে এই দামেই বিক্রি হচ্ছে। চারদিন আগে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া লাল লেয়ার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকায়।

চারদিনের ব্যবধানে লাল লেয়ার মুরগি কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। এ ছাড়া কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বর্তমানে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা দরে।

লেয়ার ও সোনালি মুরগির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইল মো. বিল্লাল হোসেন নামে এক বিক্রেতা বলেন, প্রতিদিন মুরগির নতুন চালান আসে। দাম প্রতিদিনই পরিবর্তন হয়। আমরা যে দামে কিনে আনি, কিছুটা লাভ রেখে বিক্রি করি।

এই বিক্রেতা কাপ্তান বাজার থেকে ২৯০ টাকা কেজি দরে লাল লেয়ার মুরগি কিনে এনেছেন বলে জানান।

আরেক বিক্রেতা আলী আকবর বলেন, দাম বাড়ায় কমায় খামারি ও উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। আমরা পাইকারি বাজার থেকে কিনে খুচরায় বিক্রি করি। কেন দাম বাড়ে-কমে তা জানি না।

এ ছাড়া কারওয়ান বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়, সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। কবুতর প্রতিটি ১৫০ টাকা ও হাঁস ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অস্থিরতার পর কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে মুরগির বাজারে। কয়েকদিনের ব্যবধানে এই পোলট্রি পণ্যের দাম কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। তবে মুরগির দামের এই পতনও হাসি ফোটাতে পারেনি ক্রেতাদের মুখে।

কারওয়ান বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান রুমি বলেন, বাজারে প্রতিটি জিনিসেরই দাম বেশি। নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে চাহিদা অনুযায়ী বাজার পর্যন্ত করতে পারছি না। চাহিদার তুলনায় কম কম করে কিনতে হচ্ছে। আগে পরিবারের জন্য সোনালি মুরগি কিনতাম, এখন ব্রয়লারও কিনতে পারছি না। গরুর মাংসের দাম তো আরও বেশি।

হাসান নামের এক গাড়িচালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দাম বাড়লেই কি, কমলেই কী? খাওয়া তো আর বন্ধ হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়ায়, আর না খেয়ে মরে গরিব মানুষ।

এদিকে বাজারে আগের মতোই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। গুটি কয়েকের দাম কমলেও অপরিবর্তিত আছে বেশিরভাগই সবজি।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি মরিচ মানভেদে ৪০-৬০ টাকা, মানকচু ১২০ টাকা, লাল আলু ৪০ টাকা, কচুরমুখী ১৪০ টাকা, লতি ৮০-৯০ টাকা, বেগুন ৫৫-৬০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, গাজর ৪৫-৫৯ টাকা, শসা ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, মারফা ৭০ টাকা, সজনে ডাটা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, টমেটো ৩৫-৪০ টাকা, ঝিঙা ১২০ টাকা, ধুন্দুল ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, শিমের বিচি ১০০-১১০ টাকা, কাঁচা আম ১৬০ টাকা, কুমড়া ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি পিস ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, ব্রকলি ৪০ টাকা, লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৭০ টাকা এবং প্রতি হালি কাঁচা করা ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তিন-চার দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে শাকের দাম। প্রকারভেদে ৫-১০ টাকা বেড়েছে সব ধরনের শাকের দাম। বর্তমানে প্রতি আঁটি ডাটা শাক ২০ টাকা, পাট শাক ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, লাল শাক ২০ টাকা, মাইরা শাক ৩০ টাকা, পালং শাক ১৫ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা ও লাউ শাক ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, বৃষ্টির কারণে শাক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে।

আগের মতোই অপরিবর্তিত আছে লেবুর দাম। বর্তমানে প্রতি হালি কলম্বো লেবু ৬০-৭০ টাকা , এলাচি লেবু ৬০-৮০ টাকা ও কাগজি লেবু ৭০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দাম বাড়েনি পেঁয়াজ-রসুন-আদার। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩০-৩২ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৩২-৪০ টাকা, দেশি রসুন ৯০ টাকা, আমদানি করা চায়না রসুন ১৩০ টাকা, দেশি আদা ২০০ টাকা, আমদানি করা বার্মা আদা ১৪০ টাকা এবং চীন থেকে আমদানি করা আদা ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলুর পাল্লা (পাঁচ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে।

বর্তমানে কারওয়ান বাজারে প্রতি হালি লাল ডিম ৪০ টাকা, সাদা ডিম ৩৭ টাকা ও হাঁসের ডিম ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত রয়েছে চালের দামও। মিনিকেট ৬৮-৭১ টাকা দরে, নাজিরশাইল ৭০-৮০ টাকা, পাইজাম ৪৮ টাকা, স্বর্ণা ৪৫-৪৬ টাকা, আটাশ ৫০-৫২ টাকা, পোলাও চাল ১৪০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম অপিরির্তিত থাকলেও স্বস্তি নেই ক্রেতাদের মনে। স্বপন নাথ নামে একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে বাজারে কথা হলে তিনি বলেন, কোনো কিছুরই তো দাম কম না। বাজার করতে এলেই বাজেট ফেল করছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top