‘একসঙ্গে ঘরে ফেরার চাপ’ সড়কে

1680003284.trafic.jpg

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট……
রমজানে প্রথম কর্মদিবস সোমবার (২৭ মার্চ) থেকেই রাজধানীর সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হতে দেখা গেছে, যা মঙ্গলবারও (২৮ মার্চ) অব্যাহত রয়েছে।

দুপুরের পর থেকে রাজধানীর বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ এলাকা ঘুরে সড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপ দেখা গেছে।

স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাড়তি সময় আটকে থাকতে হচ্ছে ট্রাফিক সিগনালগুলোতে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ বলছে, রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে উন্নয়নকাজের কারণে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে গেছে। এর বাইরে সড়কের তুলনায় বাড়তি যানবাহনের কারণে স্বাভাবিক সময়েই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

আর রমজানে বিশেষ করে বিকেলে অফিস শেষ হওয়ার পর বাসায় ফিরে পরিবারের সঙ্গে ইফতার করার তাড়া সবারই রয়েছে। নগরবাসীর বেশির ভাগই একসঙ্গে ঘরে ফিরতে চাওয়ায় সড়কে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক। তবে ট্রাফিক পুলিশ যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে।

বিকেল চারটার পর কারওয়ান বাজার মোড়ে দেখা যায়, সড়কের চারপাশেই যানবাহনের বাড়তি চাপ রয়েছে। গাড়িগুলো বেশ ধীরে যাচ্ছে। ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বাড়তি সদস্যরা সিগনালে দায়িত্ব পালন করছেন।

ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের বাইরেও ক্রাইম বিভাগের সদস্যরা সড়কের প্রবেশ মুখগুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের সাধারণত যত্রতত্র পার্কিং ঠেকিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

পুলিশের এমন তৎপরতার মধ্যেও গাড়ির দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়েছে। এক পাশের গাড়ি ছাড়তে গেলে অন্য সড়কগুলোতে দীর্ঘ জটলা তৈরি হচ্ছে। যানবাহনের জন্য অপেক্ষারত মানুষের জটলাও রয়েছে।

অনেকেই দীর্ঘ সময় চেষ্টা করেও গাড়িতে উঠতে ব্যর্থ হচ্ছেন। আর এই সুযোগে রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালিত অটোরিকশাগুলো আদায় করছে বাড়তি ভাড়া।

কারওয়ান বাজার থেকে মিরপুর যাওয়ার জন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন রায়হান নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী। তিনি বলেন, অফিস শেষ করে ইফতারের আগে বাসায় যাওয়ার তাড়া থাকে সবারই। কিন্তু অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়িতে ওঠার অবস্থা নেই। এমন নয় যে সড়কে গাড়ি নেই। কোনোরকমে আবার গাড়িতে উঠলেও যানজটে আটতে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দিনের পর দিন রাজধানীর সড়কগুলোতে একই অবস্থা চলছে, রমজানে তা যেন আরও বেড়ে যাচ্ছে। রোজা রেখে গরমে সড়কের এমন ভোগান্তি আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়।

শামীম নামে আরেকজন বলেন, গাড়িতে উঠতে না পারলে কেউ যে সিএনজিতে করে বা বাইকে করে যাবে, সে উপায়ও নেই। সুযোগ বুঝে চালকরা দ্বিগুণের বেশি ভাড়া দাবি করছে। এর বাইরে রাস্তায় যানজটের ভোগান্তি তো আছেই।

যানজট পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তরা ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমার এলাকায় যানজট পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক আছে। আমরা যান চলাচল ঠিক রাখতে বাড়তি ফোর্স মোতায়েনসহ নানাভাবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।

ঢাকার এক পাশে কোথাও বাড়তি চাপ পড়লে আরেক পাশে সেই চাপ পড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার এলাকায় বিআরটি প্রকল্পের কাজ দিনে বন্ধ রেখে রাতে কাজ করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজসহ নানা কাজের ক্ষেত্রে রিশিডিউল করে সড়কে চাপ কমানোর চেষ্টা করছি।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, আমরা ট্রাফিক আইন মানার জন্য সবাইকে সচেতন ও সতর্ক করছি। রমজানে মার্কেট, চার রাস্তার মোড়, বাণিজ্যিক এলাকায় বেশি যানজট তৈরি হয়। বিশেষ করে ইফতারের আগে ঘরমুখো মানুষ ও পরিবহনের চাপ তৈরি হয় সড়কে।

সেখানে ট্রাফিক সদস্যসহ ক্রাইম ডিভিশনের বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। ট্রাফিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও মাঠ পর্যায়ে থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top