আপিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত জাপানে যাওয়ার সুযোগ নেই দুই শিশুর: আইনজীবী

children-2301291342.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক ………

জাপানে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশি বাবার সেই দুই শিশু সন্তান জাপানি মায়ের জিম্মায় থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত। তবে, আপিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের জাপানে যাওয়ার সুযোগ নেই।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান শিশু দুটির বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে এ আদেশ দেন।

রায়ের পর জাপানি মায়ের আইনজীবী শিশির মনির জানান, বাচ্চাদের কল্যাণ বিবেচনায় বাবার আবেদন খারিজ করেছেন আদালত। এখন মায়ের জিম্মায় সন্তানদের থাকতে কোনো বাধা রইল না। এখনও একটি সন্তান বাবার কাছে আছে। স্বেচ্ছায় বাবা যদি ওই সন্তানকে মায়ের কাছে না দেয়, তাহলে আমরা বাবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। এ কারণে মায়ের জাপান ফিরে যেতে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে। তবে, আমরা আশা করছি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে অভ্যাসগত বাসস্থানে তারা ফিরে যেতে পারবে। জাপানে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে। এটাই প্রত্যাশা করছি।

বাবা কি সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শিশির মনির বলেন, সন্তানরা বাবা, মা যার হেফাজতেই থাকুক না কেন, কারো দেখা করতে নিষেধাজ্ঞা বা আপত্তি নেই। বাবা যদি আইন মেনে দেখা করতে চান, খোঁজ-খবর নিতে চান, সাহায্য করতে চান; অবশ্যই মা সব সময় দরজা ওপেন রাখবেন। পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় থাকুক না কেন, বাবা-মায়ের জন্য কোনো বৈষম্য নয়। এখন আপাতত বাচ্চাদের কল্যাণ নিশ্চিত হোক।

তবে, এ রায়ে ন্যায়বিচার পাননি বলে জানিয়েছেন ইমরান শরীফের আইনজীবী নাসিমা আক্তার লাভলী। তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

নাসিমা আক্তার বলেন, রায়ে আইনের কোনো প্রতিফলন হয়নি। দুই বাচ্চাকে মায়ের পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আইন কল্যাণের জন্য। কিন্তু, এর প্রতিফলন ঘটেনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করব। আপিল শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাচ্চাদের জাপানে যাওয়ার সুযোগ নেই।

রায় শুনতে বড় মেয়ে নাকানো জেসমিন মালিকাকে নিয়ে বিকেল পৌনে ৪টার দিকে আদালতে হাজির হন মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো। তবে, বাবা ইমরান শরীফকে আদালতে দেখা যায়নি। ছোট মেয়ে নাকানো লায়লা লিনাকেও আদালতে দেখা যায়নি।

৪টার একটু আগে বিচারক রায় পড়া শুরু করেন। রায়ের আগে তিনি বলেন, নাবালকের মঙ্গল ও কল্যাণ চিন্তা করে এ রায় দেওয়া হলো। নথিপত্র পর্যালোচনা করে, মামলার আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে, মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করে, খাসকামরায় শিশুদের বক্তব্য শ্রবণ করে আদালত এ রায়ে উপনীত হলো। আশা করছি, আপনারা সবাই রায়ের পর শান্ত থাকবেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top