রংপুর সিটি নির্বাচন যে কারণে জামানত হারালেন নৌকার প্রার্থী ডালিয়া

rrrr-20221228174406.webp

নিজস্ব প্রতিবেদক….

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে আওয়ামী লীগের। নয়জন প্রার্থীর মধ্যে চতুর্থ হয়েছেন নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া। জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন বাকিরাও।

নির্বাচনের ফলাফলে মোস্তফার ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারেননি কোনো প্রার্থী। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর এমন পরাজয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

ভরাডুবির জন্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিষ্ক্রিয়তা, যোগ্য প্রার্থী বাছাই না করা, সময় স্বল্পতাসহ নানা কারণকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।

রংপুর সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার চার লাখ ২৬ হাজার ৪৭০। এর মধ্যে একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ২২৯টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ফলাফলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান মিলন পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮৮৩ এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া পেয়েছেন ২২ হাজার ৩০৬ ভোট।

এছাড়া বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান ১০ হাজার ৫৪৯, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম পাঁচ হাজার ৮০৯, খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল দুই হাজার ৮৬৪, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) শফিয়ার রহমান পাঁচ হাজার ১৫৬ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি দুই হাজার ৬৭৯ ভোট পেয়েছেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পরাজয়ের কারণ প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু জাগো নিউজকে বলেন, ‘দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় ছিল না। সবাইকে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী যে কাজ করার কথা ছিল সেটা তারা করতে পারেননি। এছাড়া আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীর জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা কম ছিল।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রংপুর মহানগরের আওতাধীন কোতোয়ালি থানা আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরা মেয়র প্রার্থীর পক্ষে তেমন কাজ করেননি। তারা কাউন্সিলরদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এ কারণে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগ অর্ধেকেরও বেশি জয়ী হলেও মেয়র পদে সুবিধা করতে পারেনি। এর কারণ হিসেবে দলীয় কর্মীদের টাকা-পয়সা না দেওয়ার বিষয়টি ইঙ্গিত করেন এই নেতা।

নগরীর মুলাটোল এলাকার বাসিন্দা সাধারণ ভোটার এনামুল হকের মতে, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে পারেনি। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল তার সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা তেমন একটা নেই বললেই চলে।

এনামুল হক বলেন, ‘জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলেন একজন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তার সঙ্গে লড়াই করতে হলে সবদিক থেকেই একজন যোগ্য ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া উচিত ছিল। এতে পরাজয় হলেও এমন ভরাডুবি হয়তো হতো না।’

এ বিষয়ে রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, ‘মনোনয়ন দাখিলের আগের দিন আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত হয়। এরপর স্বল্পসময়ে সব সাধারণ ভোটারের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়নি। দলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলেও সময় স্বল্পতার কারণে এমনটা হয়েছে।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার মোবাইলে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top