ক্ষমতায় যাওয়া দূরের কথা বিএনপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে: ১৪ দল

14-dol-20221219185853.webp

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক……
দীর্ঘদিন পর মাঠের বাইরে সভা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘শিখা চিরন্তন’ প্রাঙ্গণে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুর থেকে শুরু হওয়া এ আলোচনার দীর্ঘ হয় সন্ধ্যার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। দীর্ঘ আলোচনায় ১৪ দল নেতাদের বক্তব্যে বিএনপি বধ এবং আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে উঠে এসেছে।
তাদের দাবি— বিএনপি অসাংবিধানিক শক্তির ওপর ভর করে ক্ষমতায় আসতে চাইছে। এজন্য তারা নানা সময় দফা পরিবর্তন করে আন্দোলন করছে। ১৪ দলীয় জোটসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য থাকলে বিএনপির আন্দোলন হালে পানি পাবে না। তারা ক্ষমতায় যাওয়া দূরের কথা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন— আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, ওয়ার্কাস পার্টি সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধরণ সম্পাদক শিরিন আখতার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণ-আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এসকে শিকদার, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি সভাপতি জাকির হোসেনসহ অনেকে।
সভাপতির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, ১০ ডিসেম্বর মুচলেকা দিয়ে গোলাপবাগে সমাবেশ করার মধ্যদিয়ে বিএনপি আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। মানুষকে বিজয় উৎসবে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ডিসেম্বর মাসকে আন্দোলন করার জন্য বেছে নিয়েছে তারা।

১৪ দলের সমন্বয়ক বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনাকে বারবার ঝুঁকি নিতে হয়েছে। তাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধকে সমুন্নত করেছেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সংবিধানে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, উন্নয়নে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এতে তাদের গাত্রদাহ। এ দেশ পাকিস্তানের মতো দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়নি। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানের মিলিত রক্ত স্রোতে অর্জিত হয়েছে। স্বাধীনতাকামী, প্রগতিশাল, অসাম্প্রদায়িক শক্তি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রয়েছে। এ ঐক্যে ফাটল ধরার সুযোগ নেই।

বিএনপির উদ্দেশে জেপি সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, কোনোদিন এক দফা, কোনোদিন ২৭ দফা দিচ্ছেন। এসব কাজ থেকে বিরত থেকে আসুন গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ধারাকে অব্যাহত রাখি। আপনারা যা চান আমরাও তাই চাই। আপনারা চান অবাধ নির্বাচন, আমরাও তাই চাই। আপনারা চান অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন, আমরাও চাই। আপনারা নির্বাচনে এলেই তো অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ হয় বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরের কথা বাংলাদেশ থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তারা নাকি সংবিধান পরিবর্তনের জন্য কমিশন গঠন করবে। সংবিধান বাতিল করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি রাস্তায় নেমেছে। এ সংবিধান ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে রচিত হয়েছে। অসাংবিধানিক উপায়ে সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, বিএনপি দেশে অসাংবিধানিক ধারা তৈরি করতে চায়, নির্বাচন পদ্ধতিকে অস্বাভাবিক করতে চায়। কোনো আপস ফর্মুলা নয়, অসাংবিধানিক দাবি মেনে নেওয়া নয়। বিএনপি-জামায়াতকে রুখে দাঁড়াবার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলার মাটিতে পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের ঠাঁই হবে না।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে তা ধরে রাখতে সাস্টেইন লিডারশিপ দরকার। তিনি দেশকে সমৃৃদ্ধ করার লক্ষ্যে ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এ উন্নয়ন ধরে রাখতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আস্ফালনের উৎস জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা। যারা একাত্তর সালে আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল। বাংলার মানুষ মাঁথা নিচু করতে জানে না। যারা উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে চাইবে তাদের আমরা নিশ্চিহ্ন করে দেবো।

দেশের রাজনীতি থেকে সাম্প্রদায়িক বিএনপি-জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান বলেন, স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার জন্য সাম্প্রদায়িক বিএনপি-জামায়াত চক্রান্ত করছে। এ সাম্প্রদায়িক বিএনপি-জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হোক।

গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের উন্নয়ন চায় না। আর তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে আমাদের দেশের স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। বিএনপি-জামায়াত দেশের উন্নয়ন চায় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে সরকার পতনের চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে।

আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. অসিত বরণ রায়।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top