ফের ‘নিখোঁজ’ রহিমা বেগম, দুই মেয়ে বলছেন ভিন্ন কথা

1663909604.30817.jpg

নিজস্ব প্রতিবেদক……

খুলনার আলোচিত রহিমা বেগম (৫২) ফের নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছে তার দুই মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও আদুরি বেগমের বক্তব্য। আদুরি বলছেন, তার মা রহিমা বেগম তার কাছেই আছেন। আর মরিয়ম বলছেন, আদুরি তাকে জানিয়েছেন, মা দুইদিন ধরে বাড়িতে নেই।

এদিকে, রহিমা বেগমের ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ আল সাদী মায়ের এই আত্মগোপন ‘নাটকের’ জন্য তার শাস্তি চেয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান আদালতে সাদির জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, সাদী সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে পিবিআই কার্যালয়ে এসে সাদী মায়ের বিরুদ্ধে আদালতে জবানবন্দি দিতে চান বলে জানালে তাকে পুলিশের সহায়তায় আদালতে পাঠানো হয়। পরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক মো. সরোয়ার আহম্মেদ তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। সেখানে সাদী জানান, তার মা রহিমা বেগম বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে থেকে মিথ্যা কথা বলেছিলেন। এটা তার খারাপ লেগেছে। এজন্য তিনি স্বেচ্ছায় মায়ের বিচার চেয়ে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

অন্যদিকে, রহিমা বেগম দুইদিন আগে ছোট মেয়ে আদুরির বাড়ি ছেড়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে গেছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এ বিষয়টি মরিয়ম মান্নান স্বীকার করলেও আদুরি বেগম বলছেন ভিন্ন কথা।

মরিয়ম মান্নান বলেন, তার মা রহিমা বেগম দুইদিন আগে বাড়ি থেকে চলে গেছেন বলে আদুরি তাকে জানিয়েছেন। তবে আদুরি দাবি করেন, তার মা কোথাও যাননি। মরিয়মকেও তিনি এমন কথা বলেননি।

রহিমা বেগম ফের আত্মগোপনে যাওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি গুজব দাবি করে আদুরি বলেন, আপনারা চাইলে আমার বাসায় এসে দেখতে পারেন আমার মা বাড়িতে আছেন নাকি অন্য কোথাও চলে গেছেন। যারা বলছেন, আমার মা চলে গেছেন তারা সঠিক বলছেন না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, উদ্ধারের পর রহিমা বেগমকে আদালত থেকে তার ছোট মেয়ে ও অপহরণ মামলার বাদী আদুরি বেগমের কাছে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে রহিমা বেগম আবার নিখোঁজ হয়েছেন এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।

এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা রহিমা বেগমের সাবেক ভাড়াটিয়া আব্দুল কুদ্দুস মোল্লার বাড়ি থেকে রহিমাকে উদ্ধার করা হয়। সে সময় তিনি বিভ্রান্তিমূলক কথা বলেন। পরে আদালতে জবানবন্দি দেন যে, তাকে অপহরণ করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে রহিমা অপহরণের কোনো আলামত পায়নি পুলিশ।

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। রাত সোয়া ২টার দিকে দৌলতপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী।

এছাড়া মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্ট দৌলতপুর থানায় মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরি। সেই মামলায় আসামি করা প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফকে। বর্তমানে তারা সবাই জামিনে আছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top