তেরখাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়ম!

1662458750.Komola.jpg

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট….
খুলনার তেরখাদা উপজেলা সদরের মাঝিপাড়া এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর গৃহহীনদের বসতঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) তেরখাদার বাসিন্দা মৃত চিত্ত পোদ্দারের স্ত্রী কমলা পোদ্দার প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ডাকযোগে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগপত্রে কমলা পোদ্দার উল্লেখ করেন, স্বামীর মৃত্যুর পর বহু কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিনাতিপাত করছেণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নামে একটি ঘর বরাদ্দ করেন। বর্তমানে ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান। নির্মাণাধীন গৃহের দক্ষিণ পাশেই স’মিল। সে কারণে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাসের সুবিধার্থে পেছনের বারান্দা (রান্নাঘর) ঘরের দক্ষিণ পার্শ্বে রাখার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু ঘরের ঠিকাদার বলেছেন, সিডিউলে এমনই আছে। তখন কমলা জানান, তাদের বাড়ির পাশে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্য একটি ঘরে দক্ষিণ পাশ দিয়ে রান্নাঘর। তাকেও সেভাবে দিতে অনুরোধ করেন, না হলে তাদের বাকি খালি জায়গাটুকু ব্যবহার করতে পারবেন না বলে জানান। কিন্তু ঠিকাদার তার কথা রাখেননি। উপরোন্তু তাদের ঘরের মেঝে ঢালাইয়ের দিনে নিম্নমানের ময়লাযুক্ত খোয়া ও বালি ব্যবহার করেছেন ঠিকাদার। ভালো খোয়া দিতে বললে তিনি জানান, সব জায়গায় এই খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ঢালাইয়ের দিনে ৪৫ কড়াই বালি ও ৪৫ কড়াই খোয়াতে মাত্র সাড়ে ৩ বস্তা সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।

বিষয়টি ঠিকাদারকে বললে ঠিকাদার বলেন, তোমরা বেশি লাফাচ্ছো, কোনো কাজ হবে না। শুধু বালি দিয়ে ঘর করে দেব। পরে কর্মরত শ্রমিকরা গোপনে তাদের জানান, এই সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দেওয়া যায় না, তোমরা কিছু সিমেন্ট দাও। এরপর কমলা পোদ্দার কিছু সিমেন্ট কিনে দেন। ঘরটি ২ নম্বর ইট দিয়ে নির্মাণকাজ চলছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

কমলা পোদ্দার ঠিকাদারকে ২ নম্বর ইটের কথা বললে ঠিকাদার জানান, তোমাদের ইট আসবে ঢাকা থেকে, তারপর ২/৩ মাস পরে কাজ হবে।

অভিযোগকারী কমলা পোদ্দার বাংলানিউজকে বলেন, চলতি মাসের ২ তারিখ কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার। ধুলা-বালিসহ খোয়া দিয়ে ঢালাই দিয়ে দিচ্ছে। এটার প্রতিবাদ করলে পরে খোয়া ধুয়ে দিয়েছে। কত ব্যাগ সিমেন্টের বাজেট আছে জানতে চাইলে ঠিকাদার বলেন, এসব জানার তুই কে? মিস্ত্রীরা আমাদের বলেন, এত সিমেন্ট কম দিলে ঘর ভালো হবে না। পরে আমরা ২ ব্যাগ সিমেন্ট কিনে দিয়েছি। মাটির নিচে মাত্র একটা ইট দিয়ে ঢালাই দিয়েছে। কিন্তু অন্য জায়গায় মাটির নিচে এক ফুট ইট দিয়েছে।

গৃহ নির্মাণকাজে অনিময় হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ঠিকাদার আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, কমলা পোদ্দারের পরিবারের কাছ থেকে সিমেন্ট নেওয়া হয়েছে কিনা জানি না। আমি সাইটে ছিলাম না। এটা মিস্ত্রীরা জানে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আমি ঠিকাদার নই, আমি মিস্ত্রীদের প্রধান।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এ কাজের সরাসরি তদরকি করেন ইউএনও। কমলা পোদ্দার তো আমার কাছে আসতে পারতেন। যেহেতু বিষয়টি জানলাম, আমি অবশ্যই খবর নেবো।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top