মাঙ্কিপক্স: বিশ্বব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি ডব্লিউএইচওর

monkeypox-20220723203747.webp

আন্তর্জাতিক ডেস্ক……..
এবার মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। শনিবার (২৩ জুলাই) ডব্লিউএইচও ঘোষণা দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের বিস্তার আন্তর্জাতিক উদ্বেগের পাশাপাশি জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতার পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সারা বিশ্বের সরকারগুলো ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কঠোরভাবে চেষ্টা চালালেও ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়ার ‘সুস্পষ্ট ঝুঁকি’ রয়েছে। খবর ফোর্বস ও সিএনবিসির।

জাতিসংঘের সংস্থাটির পক্ষ থেকে এটিই সর্বোচ্চ সতর্কতার মাত্রা। ২০০৭ সালে চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইবোলা, জিকা, কোভিড-১৯, পোলিওসহ মাত্র ছয়টি রোগের প্রাদুর্ভাবের জন্য এই সতর্কতা জারি করেছে তারা।

গত জুনে ডব্লিউএইচও প্রধান তেদ্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছিলেন, তিনি মাঙ্কিপক্সকে ‘গুরুতর উদ্বেগ’ হিসেবে দেখলেও জরুরি সতর্কতা জারির মতো ভাবছেন না। তিনি জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে আলোচনার পর নিজের মত বদলেছেন।

মাঙ্কিপক্স প্রাদুর্ভাব আসলেই জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে কি না, সে বিষয়ে ঐকমত্য হতে পারেনি বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবু এই ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডব্লিউএইচও প্রধান। তিনি বলেছেন, আমাদের একটি প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এটি ছড়াচ্ছে নতুন পদ্ধতিতে, যে বিষয়ে আমরা খুব কমই বুঝতে পারি। এ কারণে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিশ্বব্যাপী মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব আন্তর্জাতিক উদ্বেগের জরুরি স্বাস্থ্য সতকর্তার পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে।

মাঙ্কিপক্সের নামকরণ করা হয় ৬৪ বছর আগে, ১৯৫৮ সালে। সর্বপ্রথম মাঙ্কিপক্সের ভাইরাস খুঁজে পাওয়া যায় বানরের শরীরে। ১৯৭০ সালে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে যখন গুটিবসন্ত নির্মূলের জোর চেষ্টা চলছে, তখনই মাঙ্কিপক্সের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এরপর থেকে মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষের মধ্যে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়েছে, যা এখন ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বিশ্বে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ৭০টির বেশি দেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ১৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে জুনের শেষ থেকে জুলাইয়ের শুরু পর্যন্ত সংক্রমণের হার বেড়েছে ৭৭ শতাংশ। সংস্থাটি জানিয়েছে, পুরুষ সমকামীদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

চলতি বছরে আফ্রিকায় মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ মহাদেশের বাইরে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) তথ্য বলছে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে সেরে উঠছে। ভাইরাসটি একটি ফুসকুড়ি সৃষ্টি করে, যা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা বলেছেন, ব্রণ বা ফোস্কার মতো দেখতে ওই ফুসকুড়ি খুব যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top